ইবনে খালদুন

ইবনে খালদুন



 জন্মঃ- ইবনে খালদুন ১৩৩২ খ্রিষ্টাদ্বের ২৭ মে তিউনিসে বসবাসকারী এক আন্দালুসিয়ান (মুসলিম স্পেন ) পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । 

পুরো নামঃ- ওয়ালী-উদ্-দীন আবদুর রহমান ইবনে মোহাম্মদ ইবনে আবদুর রহমান ইবনে খালদুন ।

 ডাক নামঃ- আবু যায়েদ এবং মূল নাম আবদুর রহমান ।

 কর্ম জীবনঃ- মুসলিম ঐতিহাসিক, রাজনীতিবিদ ও সমাজ-দার্শনিক মতবাদ এর ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারি অবদান রেখে গিয়েছেন এই দার্শনিক । ইবনে খালদুন ছোট থেকেই তিক্ন বদ্ধী সম্পর্ণ ছিলেন ।মাত্র বিশ বছর বয়সে তিনি হাবসী সুলতান আবু ইসহাক ইব্রাহীমের খাস মুন্সি পদে নিযুক্ত হন ।পরবর্তীতে তিনি আফ্রিকার আন্তঃরাষ্ট্রীয় সমস্যায় শান্তির বার্তাবহক হিসেবে ভূমিকা পালন করেন । শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হলে তিনি ওরান প্রদেশের ইবনে সামলর দুর্গে বসবাস আরম্ভ করে ।এখানে তিনি চার বছর ইতিহাস ,দর্শন ও সমাজবিজ্ঞান সম্পর্কে গবেষণা করেন ।পরবর্তী সময়ে তিনি আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অদ্যাপক হিসাবে নিযুক্ত হন ।এরপর তিনি আমৃত্যু পর্যন্ত মিশরের প্রধান বিচারপতি নিযুক্ত হন। 

 

গ্রন্থসমূহঃ-

  1. কিতাব আল-ইবার ওয়া-দাওয়ান আল-মুবতাদায় ওয়াল-খবর ফারি তারেক আল-আরব ওয়া--বারবার ওয়া-মন আরাহুম মিন ধাওয় আশ-শান-আল-আকবরের
  2. লুববু--মুহাসাল ফি উসওলু-দি-দ্বীন
  3. সিফাউস-সায়েল
  4. ' লাকাউলিস সুলতান
  5. ইবনে খালদুন। ১৯৫১ ইবনে খালদুনের সাথে পরিচয়: তাঁর পশ্চিম পূর্ব যাত্রা। মুহাম্মদ ইবন-তাওয়িদ আত-তানজিল কর্তৃক প্রকাশিত, কায়রো (আরবিতে আত্মজীবনী)
  6. ইবনে খালদুন। ২০১৭ মুকাদ্দিমাহ: ইতিহাসের একটি পরিচয় বাংলা অনুবাদ করেছেন গোলাম সামদানী কোরায়শী

 

আসাবিয়া ( আরবি  عصبية‎‎ 'সাবিই'য়া) একটি আরবী শব্দ যার অর্থ সামাজিক সংহতি বা একতা। মানুষ যখন তাদের চিন্তার সাদৃশ্য আকর্ষণে পরস্পরের সহায়তা লাভে এগিয়ে গেছে এবং সম্মিলিত প্রয়াসে পৃথিবীর বুকে অধিকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছে ,তখনই 'উমরান' বা সভ্যতার জন্ম হয়েছে ইবনে খালদুন তার আল-মুকাদ্দিমায় আলোচিত এই নুতন বিষয়ের নামকরণে শব্দটি ব্যবহার করেছেন সহজ কথায় সভ্যতা সংস্কৃতি বলতে যা বুঝায় তা হল ,এই মানব সমাজেরই বিনির্মিত কীর্তিমালা কিন্তু মানব সমাজ বা এই জনশক্তির প্রচেষ্টা স্বত্বেও উপরিউক্ত কীর্তিমালা সর্বত্র সমানভাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেনি অনুরূপ বৈচিত্রের কারণ হিসেবে প্রাকৃতিক প্রভাবের কথা আমরা ইতিপূর্বে উল্লেখ করেছি । ইবনে খালদুন   প্রকার বহির্গত কারণ ছাড়াও সমাজ শক্তির অন্তর্গত একটি কারণও অত্যন্ত সুস্পষ্টভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। কারণটিকে তিনি নাম দিয়েছেন 'আসাবিয়া' বা গোত্রপ্রীতি প্রীতিশক্তি যে পরিমাণে সঙ্ঘবদ্ধ সক্রিয় হয়েছে ,সভ্যতা বিনির্মাণে তার প্রভাবও হয়েছে ততোই স্থায়ি দর্শনীয়। বস্তুতঃ এই গোত্রপ্রীতি থেকেই মানুষের গোত্রবদ্ধ জীবনের বিকাশ এবং এটি মানুষের সমাজ বিকাশের প্রাথমিক স্তর ইবনে খুলদুন একেই 'বদয়া' বা ‘যাযাবরী‘ জীবন বলে আখ্যায়িত করেছেন কিন্তু ইসলামের আবির্ভাবকালে এবং পরবর্তী ইসলামী চিন্তাধারাতেও এই 'আসাবিয়া' বা 'গোত্রপ্রীতি'কে সুনজরে দেখা হয়নি । ইসলাম এই যাযাবরী গোত্রপ্রীতির বাধা অপসারিত করেই সমগ্র আরবকে এক ঐক্যসূত্রে গ্রথীত করতে চেয়েছিল


মুকাদ্দীমাঃ- গ্রন্থটিতে তিনি তার সমসসাময়িককালের ইতিহাসবেত্তাদের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে একটি বিশেষ ত্রুটির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। ঐতিহাসিকগণ যাতে ইবনে খালদুনের সমাজ সম্পর্কীয় মতবাদকে যথাযথভাবে বিচার করতে পারেন সে মাপকাঠি স্থির করে দেওয়ার জন্য তিনি 'আল-মুকাদ্দিমা' গ্রন্থের ভূমিকায় সমাজের ধরন এর পর্যালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, সমাজবিজ্ঞানী একদিকে যেমন বর্তমানকে নিয়ে পঠনপাঠন করে, তেমনি তা অতীতকে অবলোকন করে; যার ফলে ইতিহাস সমাজবিজ্ঞানের উপাদান যোগান দেয়। পূর্বেকার মুসলমান পাশ্চাত্যের ঐতিহাসিকদের মতো নয় বরং এক ভিন্নতর দৃষ্টিতে তিনি সমাজ ইতিহাসকে একটি স্বতন্ত্র বিষয়ের মর্যাদা দিয়েছেন।

 







মৃত্যুঃ-১৯ মার্চ ১৪০৬ খ্রিষ্টাব্দে ৭৪ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন।
ইবনে খালদুন ইবনে খালদুন Reviewed by matir mon on August 30, 2021 Rating: 5

No comments:

ভালোবসার শেষ নিবেদন

  ভালোবসার শেষ নিবেদন আমার আবেগ, অনুভূতি তুই সব কিছুই জানোস, নতুন করে কিছু বলার নাই । একচুয়্যালি, আমি তোর মতো করে কোনো মেয়ের সাথে মিশি নাই ।...

Powered by Blogger.