৬ষ্ট পর্ব
তুষার পুষ্প দুজনেই একা বারান্দায়। তুষার যেনো এই সময়টারই অপেক্ষা করছিলো। মাস খানেক সময় ধরে তারা একে অপরের সাথে কথা বলেনা। তারা বারান্দার দুই পাশে দুই জন চুপ করে দাড়ানো। তারা ভাবতেছে দু জনের মধ্যে কেহ আগে কথা বলোক। মিনিট পাঁচ এর মতন তারা অপেক্ষা করে এবং তারা সিদ্ধান্ত নেয় একে অপরকে ডাক দেয়ার। তখন তারা দুজনেই এক সাথে বলে উঠলো,
কেমন আছো?
এক সাথে তাদের দুজনের কথা মিলে যাওয়ায়, দুজনেই একটু হেসে উত্তর দেয়,
ভালো।
তাদের কথা বলাটা একই সময় হওয়ায় তুষার পুষ্পকে বলে,
~ তুমি আগে বলো।
~কি বলবো?
~কিছু বলার নাই?
~আছে ত।
~তা হলে বলো?
~ আমি না তুমি আগে বলো। নাহ্! থাক আমিই আগে বলি।
~ বলো?
~ আমি আসলেই দুঃখিত।ঐ দিন আমার এমন আচরণ করাটা ঠিক হয় নাই। আমি বিষয়টার জন্য খুব লজ্জিত।
~ হু বুঝচ্ছি।
~ কি?
~ এইযে তোমার কথা।
~ কি বুঝচ্ছ?
~ এইয়ে তুমি আমায় ভালোবাস। আমায় ছাড়া থাকতে পারবা না।
~হু।
~ ঐ খানেই দাড়িয়ে থাকবা। কাছে আসবা না।
~হু। আসবো ত। যদি বুকে জরিয়ে নাও।
~ চলে আসো তা হলে। এই তৃষ্ণাক্ত বুকের তৃপ্তি মিটিয়ে দিয়ে যাও।
তুষার এই কথা বলার সাথে সাথে পুষ্প এক দূরে তুষারকে এসে জরিয়ে ধরে। এবং কেঁদে উঠে বলতে থাকে,
~বলো আমায় আর এত কষ্ট দিবা না। যদি আর এমন কষ্ট দাও আমি নিজেকেই শেষ করে দিবো।
~তুমি জানো তোমার সাথে কথা বলতে না পেরে আমি কতটা কষ্টে ছিলাম। আমি প্রতিদিন তোমার ছোট বোনের কাছ থেকে তোমার খোজ নিতাম।
~ আর এমন করবো না কোনো দিন। আর তেমাকে কোনোদিন সন্দেহ করবো না।
হঠাৎ করে মিমের চিৎকার। তুষার ও পুষ্প দূরে ওয়াশ রুমের কাছে যায়। সেখানে যেয়ে তুষার লক্ষ করে করে ওয়াশ রুমের দরজাটা বাহিরের দিক দিয়ে লাগানো। মিম ভিতর থেকে চিৎকার করছে। তুষার দরজাটা খুলে এবং পুষ্প ভিতর থেকে মিমের শরিরে কাপড় জরিয়ে বাহিরে নিয়ে আসে। মিম চুপ হয়ে চোখ বড় করে শুধু তাকিয়ে আছে । একটু পর রাকিবে সাথে সিয়াম দূরে আসে । পুষ্প মিমকে রুমে নিয়ে যায়। সিয়াম রাকিব ও তুষার বাহিরে দাড়িয়ে থাকে। কিছু সময় পর তারাও রুমে যায়।
মিম বড় বড় চোখ করে খাটে বসে আছে। তারা সবাই মিমকে ঘিরে বসে আছে। তুষার মিমকে লক্ষ করে বলে।
~ তুই ওয়াশ রুমে কি করছিলি। ওয়াশ রুমের দরজা বাহির থেকে লাগানো ছিলো কেনো।
মিম কাপো কাপো গলায় বলে,
~আমি রাতে সব সময় গুসল করে ঘুমাই। প্রতি দিনের মতন আমি আজও গুসল করতে যাই ওয়াশ রুমে। গুসল প্রায় শেষ, কাপড় পলটানোর সময় আমি লক্ষ করি আমার দরজার সামনে কে যেনো দাঁড়িয়ে আছে। আমার গুসল করাটা সে দেখছে।
এমন সময় বুড়োলোকটা একটা লন্ঠন নিয়ে তাদের কছে আসে। এসে তাদের বলে,
~ কোনো সমস্যা হয়ে ছে তোমাদের। এখনো ঘুমাও নাই তোমরা ?
রাকিব কথার উত্তরে বলে,
~ এখানে আমাদের ছাড়া আর কেহ আসছিলো?
~ কেনো বাবা আমিত কিছুই বুঝতে পারছি না।
মিম বিছানা ছেড়ে উঠে বলে,
~ আমি এখানে গুসল করতে ছিলাম। আমার গুসল দরজারা সামনে থেকে কে যেনো দেখছিলো। আমি প্রথমে মনে করছি সিয়াম হয়ত দাড়িয়ে আছে। এবং আমাকে দেখছে।
সিয়াম বলে উঠলো,
~বিশ্বাস কর আমি এখানে আসি নাই। আমিত রাকিবের সাথে ছাদে বসে সিগারেট খাচ্ছি লাম। না হয় রাকিবকে জিগা আমি তার চোখের আড়াল হইছি কি না।
মিম একটু রেগে গিয়ে বলে,
~ আগে কথা শেষ করতে দে। আমি যাকে দরোজার বাহিরে যদকে দেখলাম সে আমাদের মধ্যে কেহ না। লোকটি লম্বায় ছয় ফুট হবে এবং শরির দেখতে রোগাটে।
পুষ্প বলে,
~ তার পর?
~ তার পর আমি কিছুটা ভয়ে ভয়ে জিগ্যেস করি, এখানে কে। বলার সাথে সাথে আমার দিকে এগিয়ে আসে। এবং দরোজার কাছে আসার পর আমি চিৎকার দিলে দরোজাটা লাগিয়ে এখান থেকে চলে যায়।

No comments: