ছোট গল্প (কালো চাদর - ৫ম পর্ব)

 ৫ম পর্ব


সময়টা রাত আট টা ত্রিশ মিনিট। 

মিম পুষ্পকে নিয়ে রুমে বসে আছে। পুষ্প প্রথম থেকেই চুপ করে আছে। কারো সাথে তেমন কথা বলেনা। মিম তার মোবাইলটা হাতে নিয়ে ফেসবুকিং করছে। পুষ্প খাটের উপর মাথা নিচু করে বসে আছে। মিম কিছুক্ষণ পর পুষ্প কে বলে, 

কিরে পুষ্প তুই এমন করে আছত কেনো। কথা নাই বার্তা নাই। কলেজ কেম্পাসে ত তকে কথায় হাড়ানোই যায় না। এত চুপ করে থাকলে হবে। গুরতে এসে চুপচাপ থাকাটা ভালো দেখায় বল। কি হইছে? 

হে,   কই কিছু হয় নাইত। এ! মানে ভালো লাগতে ছে না। 


বুঝি সব বুঝি। তুষারের কি দুষ। তুই নিজেইত তুষার কে বলছত তর সাথে কথা না বলতে। তাই হয়ত তর সাথে কথা বলে না। 


আমি রাগের মথায় কি না কি বলছি সেটার জন্য আমার সাথে সে কথা বলবে না। আমারে এত কষ্ট দিবে। পরিক্ষার শুরুর আগে থেকে সে কথা বলে না আমার সাথে। আমার ত মনে হয় সে আমারে ভালোই বাসে না। আমারে ফেসবুক থেকে, নাম্বার থেকে   সব জায়গা থেকে ব্লক করে রেখেছে। তার সাথে যোগাযোগে অনেক চেষ্টা করেছি। 


তুইত আগে ব্লক করছিলি তুষার কে। আর তুই তারে বকাঝকা করাপ পর আমাদের সাথে সে প্রচুর কান্না করে। তুই ব্লক করার পর তকেও সে ব্লক করে দেয়। 


কিন্তু আমিত তারে পরদিনই আনব্লক করে দিছি। 


তুই যে আনব্লক করছত সেটাত তুষার জানে না। 


পুষ্প একটু কাঁদোকাঁদো চোখে বলতে থাকে, 


হু, সবদোষ ত এখন আমারই। ও ত কোনো অন্যয় করে নাই। তরা সবসময় তুষারের হয়ে কথা বলিস। আমাকে তরা মুল্যই দেছ না। ঐ দিন তার মোবাইটা চেয়ে ছিলাম ও দেয়নাই। তাইত তারে বকা দিছি 

শুন পুষ্প তুষার খুব ভালো ছেলে, তুই শুধু শুধু তুষার কে সন্দেহ করছ। তকে ছাড়া তুষার অন্য কাউকে চিন্তাই করে না। 


পুষ্প চোখে জল মুছতে মুছতে  বলে,

 থাক, এইসব বাদদে । চল বারান্দায় যাই দেখ বাহিরে কি সুন্দর চাঁদের আলো। 


মিম পুষ্পকে নিয়ে বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ায়। 

বারান্দা বাড়িটির দক্ষিনে থাকার কারণে, দক্ষিণা বাতাস পুরোটাই বারান্দায় এসে পরে। তারি সাথে পুর্নিমা চাঁদের আলো। চার দিকে ঝোপঝাড়, জোনাকি পোকা মিটমিট আলো  ঝিঁঝি পোকা কার গান অনেকটাই পুষ্পের মন ভালো করে দেয়। পুষ্প বারান্দার একপাশে দাঁড়িয়ে দেয়ালের গায়ে হাত দিয়ে মাথাটা বাহিরের দিকে  ঠেলে দিয়ে একটি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে খুব আনন্দের সাথে মিমকে বলে,

নিজেকে আজ খুব হালকা মনে হচ্ছে। এখনে যেনো আমাকে দক্ষিণা হাওয়া উড়িয়ে নিয়ে যাবে। 

বললা মিম আজ দক্ষিণা হাওয়া আমারে যেখানে খুশি নিয়ে যেতে। বলে দে বাতাসকে আমি তার সাথে যেতে রাজি। 

মিম পুষ্পের কথা শুনে উচ্চ কন্ঠে হাসা আরম্ভ করে। হসিটা যেনো থামতেই চাচ্ছে না। 

পুষ্প এগিয়ে এসে মিমের শরিরে ধরে একটু ঝাঁকুনি দিয়ে বলে, 

এতে হাসার কি আছে, 

এ মা!  কেনো হাসবে না বল। আমি যে পুষ্পের মুখ থেকে কথা বাহির হতে শুনেছি। 

ঢং করিছ না এখন চুপ কর। 

হু ঢং! হা হা হা হা। 

এমন বেহায়ার মতন হাসিস না ত। বিরক্ত হয়ে যাচ্ছি। 

আচ্ছা বাবা আর হাসবো না। ত এখন বল তুষার কে ডেকে দিবো। 


তুষারের কথা শুনতেই মাথাটা নিচু করে একটু মুচকি হাসি দিবে বারান্দার এক পাশে চলে যায় পুষ্প। পুষ্পের দিকে তাকিয়ে মিম বলে, 

এ বাবা লজ্জাও আছে দেখি, হা হা হা হা। 


মিমের হাসি শুনে তুষার, রাকিব, সিয়াম সবাই বারান্দায় আসে। এসে মিম ও পুষ্পকে দুই দিকে দেখে রাকিব মিমতে বলে, 

কিরে মিম পুষ্প ঐ দিকে একা তুই এখানে হাসতে হাসতে শেষ। 

মিমের হাসি যেনো কিছুতেই থামছে না। হাসির জন্য মিম কথাই বলতে পারছে না। দুই চার মিনিট পর হাসি থামলে। মিম রাকিব ও সিয়াম কে ইঙ্গিত দিয়ে এখান থেকে চলে যেতে বলে। রাকিব বিষয়টি বুঝতে পেরে বলে, 

সিয়াম আমার মোবাইলটা পাচ্ছি না চল খুজে দিবি। 

সিয়াম রাকিবের সাথে চলে যায়। এই দিকে মিম এর ওয়াশ রুমে যাওয়ার কথা বলে মিম ও চলে আসে।   

ছোট গল্প (কালো চাদর - ৫ম পর্ব) ছোট গল্প (কালো চাদর - ৫ম পর্ব) Reviewed by matir mon on June 15, 2021 Rating: 5

No comments:

ভালোবসার শেষ নিবেদন

  ভালোবসার শেষ নিবেদন আমার আবেগ, অনুভূতি তুই সব কিছুই জানোস, নতুন করে কিছু বলার নাই । একচুয়্যালি, আমি তোর মতো করে কোনো মেয়ের সাথে মিশি নাই ।...

Powered by Blogger.